Quantcast

করোনা : সুযোগ কিংবা সম্ভাবনার ক্ষেত্র

করোনা আমাদের অনেক কিছু পাল্টে দিয়েছে। পাল্টিয়েছে কারো জীবন, কারো বা চলাফেরার ক্ষেত্র। এ লকডাউন চলাকালীন আমরা প্রায় সবাই নিশ্চয়ই এই কথাটি দেখেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে, “চাকরি করলে সরকারি, ব্যবসা করলে তরকারি” কিন্তু সত্যিই কি তাই? যখন অনেক প্রতিবন্ধকতা কিংবা সীমাবদ্ধতা থাকা স্বত্ত্বেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ওয়ার্ক ফরম হোম চালু হয়েছে, তখন ডিজিটাল প্লাটফরম গুলো ব্যবহারে আমাদের দক্ষ হতে বাধ্য করেছে। কিংবা অনলাইন ব্যবসায়ের কথা বলি যদি? আমাদের পরিবারের যে সদস্য হাজারটা দোকান ঘুরে আগে নিজের কেনাকাটা করতো, ২/৩ ঘন্টার জ্যাম ঠেলে কোনো কিছু
কিনতে বাইরে যেতো, সে এখন ঘরে বসে অনলাইনে শপিং করছে, অনলাইনে ক্লাস নেয়ার জন্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বাসায় থেকে অনলাইনেই অর্ডার করছে। বাইরে বেরিয়ে রাস্তার অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার বদলে অনলাইনে হোম মেড ফুড অর্ডার করছে। এ লকডাউন না থাকলে হয়তো বা করতো না। কারণ অনলাইনে অর্ডার করে ভোগান্তির শিকার হওয়ার উদাহরণ ও তো কম নয়। সেদিক থেকে তা স্বত্ত্বেও যেহেতু আমরা কাস্টমাররা অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ছি সেক্ষেত্রে একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে এই ক্ষেত্রে সফলতা লাভ করার।

এ তো গেলো আমি কাস্টমার হিসেবে যে ধারণা। এখন আমি যখন অন্য প্রান্তে আছি মানে আমি কাস্টমারদের সার্ভিস দিচ্ছি তখন? এখানে বলে রাখা ভালো, ব্যবসায়ের শিক্ষার্থী হিসেবে কৌতুহল থেকেই হোক কিংবা ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা লাভের জন্যেই হোক, বেশ কিছুদিন এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে নিজেদের উদ্যোগে এক ধরনের ছোটখাটো অনলাইন ব্যবসায় করার সুযোগ হয়েছিলো। বলতে দ্বিধা নেই, বাস্তবিক নানান রকম অভিজ্ঞতার সুযোগ তখন হয়েছিলো। এখন তো অনলাইনে প্রচুর পেইজ, নানান ধরনের গ্রুপ তো আছেই। তাহলে একজন কাস্টমার অন্য পেইজ গুলো থেকে না কিনে কেনো আপনার পেইজ থেকে প্রোডাক্ট কিনবে? হ্যা, আপনি আপনার পেইজ প্রমোশন করলেন, কাস্টমারের নিউজফিডে গেলো তখন তারা প্রোডাক্ট কিনলো সেটা তো আছেই। কিন্তু আপনি আপনার পেইজ প্রমোশনের পিছনে পুরোটা ব্যয় না করে যদি কাস্টমারদের সাথে পারসোনাল কমিউনিকেশন তৈরী করার জন্যেও পদক্ষেপ নেন, কেমন হয় ব্যাপার টা? আমি যখন ব্যবসায় শুরু করেছিলাম তখন প্রাথমিক পর্যায়ের সকল অর্ডার পরিচিতজনদের কাছ থেকেই বেশিরভাগ পেয়েছিলাম, এবং আমি দেখেছি, তারা যখন বেশ সন্তুষ্ট হতো তখন তাদের আশেপাশের আরো মানুষদের এ সম্পর্কে বলতো। কাজেই এখন যখন এই করোনা পরিস্থিতে অনলাইনে কাস্টমার বেড়েছে তখন এই সেক্টরে আমাদের আরো মনোযোগী হওয়ার সময় বোধ হয় এখনই। এবং আমরা দেখতেও পাচ্ছি প্রোডাক্টের প্রমোশনগুলোও সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সাথে মার্কেটাররা মিলিয়েই করছেন। উদাহরণ স্বরুপ যদি বলি, পন্ডস হোয়াইট বিউটি আগে বিজ্ঞাপন দিতো, বিভিন্ন ইভেন্টের জন্যে মেকাপ লুক, পাশাপাশি এখন ওরা বিজ্ঞাপনে আরেকটা সেগমেন্টস চালু করেছে অনলাইন ক্লাসের জন্যে ইন্সট্যান্ট মেকাপ লুক। এবং একটা সময় যখন জুম নামক সাইটটির কথা মানুষ জানতোই না, এখন প্রয়োজনীয় মিটিং, আলোচনা, ওয়ার্কশপ, সেমিনার গুলো করার জন্যে এই সাইটটির সাথে মানুষ ব্যবহার করে একরকম অভ্যস্থও হয়ে গিয়েছে। কাজেই পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে অনেক কিছুরই পরিবর্তন আসবেই। সেই পরিবর্তনকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে সেখান থেকেই আমাদের সম্ভাবনাগুলোকে খুঁজে বের করে আনা লাগবে। এবং আমরা যখন পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারবো, তখনই আরো নানান সুযোগের ক্ষেত্রগুলো তৈরী করাটা আমাদের জন্যে আরো সহজতর হবে।

This article was also published on the 3rd Marketing Day (2020) Publication.

Share this article
Shareable URL
Prev Post

4th Bangladesh Marketing Day 2021 Publication

Next Post

Improving Net Promoting Score Via e-WOM

Read next

বিকল্প ধারার বিজ্ঞাপন প্লাটফর্মঃ টেলিভিশন চ্যানেল বনাম সামাজিক মাধ্যম

একটা সময় ছিলো লাখ লাখ টাকা খরচ করে মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন দেয়া ছাড়া গত্যন্তর ছিলো না। টিভি চ্যানেলগুলোতে…
0
Share